শমসের আলী, আগের দরবেশ এখন পুরোদমে চাঁদাবাজ, নাম ভাঙাচ্ছেন বিএনপির
চট্টগ্রামের এনায়েত বাজারের বাসিন্দা শমসের আলী নিজেকে বিএনপি কর্মী পরিচয় দিয়ে ‘দরবেশের’ বেশ ধারণ করে ৫ আগস্টের পর থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন চাঁদাবাজি ও দখলদারি। হাসিনা সরকারের আমলে যাকে এলাকাবাসী কখনো বিএনপির কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত দেখেনি, সেই শমসের আলী এখন নিজেকে প্রচার করছেন বিএনপির ‘অত্যাচারিত কর্মী’ হিসেবে। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে, মাথায় পাগড়ি, লম্বা দাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে, পরহেজগারের ভাব ধরে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ দখল, চাঁদাবাজি ও মাদক স্পটকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার মতো ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড।
সরকার পতনের পর শমসের আলীর নজরে পড়ে নিজ এলাকার প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের ‘মিনি ক্যান্টনমেন্ট’ নামে পরিচিত একটি ক্লাব, যা আওয়ামী লীগ নেতা রিটু দাস বাবলুর দখলে ছিল। সুকৌশলে সেই ক্লাবটি দখলে নেন শমসের। তার কিশোর গ্যাং দিয়ে তিনি ক্লাবটি কব্জায় রেখেছেন এবং পাশেই অবৈধভাবে অটোরিকশা চার্জিং পয়েন্ট চালিয়ে অর্থ উপার্জন করছেন। দেখা গেছে, ক্লাবের বারান্দায় তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কেরাম বোর্ড খেলায় ব্যস্ত থাকে।
বিশ্বস্ত সূত্র ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বরাতে জানা যায়, সিআরবি এলাকায় ভাসমান অন্তত ১০টি দোকান থেকে মাসিক চাঁদা আদায় করছেন শমসের। রেলওয়ের জমি দখল করে সেখানে পিকআপ স্ট্যান্ড বানিয়ে ভাড়া দিয়ে চলেছেন, আর পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টার দখল করে তা ভাড়ায় চালাচ্ছেন—যার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের এককালীন অগ্রিমও নিয়েছেন।
(বক্স)
এছাড়া, অনেকবাজারের গোয়ালপাড়া সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী বর্ণক সংসদ ক্লাব দখল করে তা পানি ও বিস্কুটের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছেন। অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে—তুলাতুলি ব্রয়লারসহ বিভিন্ন মাদক স্পট থেকে নিয়মিত টাকা পান শমসের। সেই টাকার বিনিময়ে আশ্রয় দিচ্ছেন শীর্ষ মাদক কারবারি ও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত শুকুরকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা জানান, চাঁদাবাজি, দখলদারি এবং মাদক স্পট থেকে আদায়কৃত অর্থ মিলিয়ে শমসের আলী প্রতি মাসে আয় করেন প্রায় ৩.৫ থেকে ৫ লাখ টাকা।
Leave a Reply