হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গা আবারও কেঁপে উঠেছে। রয়েল ক্যাপিটাল স্টক ব্রোকার হাউসের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বেলায়েত হোসেন নয়ন গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় চাকরিচ্যুত হয়েছেন।
আমাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, নয়ন দীর্ঘদিন ধরে এক উচ্চপ্রোফাইল ব্যবসায়ীর একাউন্ট ব্যবহার করে লোকসানের হিসেব দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছিলেন। গ্রাহকের অনুমোদন ছাড়াই শেয়ার কেনাবেচা, ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি দামে শেয়ার কেনা এবং কম দামে বিক্রি—এসবই ছিল তার প্রতারণার হাতিয়ার।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সস্তায় কেনা যেত এমন শেয়ার তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে বেশি দামে কিনে আবার কম দামে বিক্রি করতেন। গ্রাহককে দেখাতেন লোকসানের হিসাব, আর নিজের পকেটে তুলতেন লাখ লাখ টাকা।
শুধু গ্রাহকের অর্থ নয়, নিজস্ব শেয়ারেও অস্বাভাবিক মুনাফা করেছেন নয়ন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ ও বিধি ১৯৮৭ অনুযায়ী স্টক ব্রোকার হাউসের কোনো কর্মকর্তা নিজে সরাসরি লেনদেনে জড়িত থাকতে পারেন না। কিন্তু নয়ন ওই আইন অমান্য করে নিজের একাউন্টে শেয়ার কিনে তা আবার গ্রাহকদের বেশি দামে বিক্রি করে নিয়মিত লাভবান হচ্ছিলেন।
কোম্পানির অভ্যন্তরীণ তদন্তে এসব বেরিয়ে এলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ারও চেষ্টা করেন নয়ন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বড় অংকের অর্থের প্রস্তাব দেন ঘটনাটি গোপন রাখার জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত গ্রাহকের অভিযোগে তদন্তে তার প্রতারণা প্রমাণিত হয়।
আমাদের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শুধু এক ব্যবসায়ীর একাউন্ট থেকেই নয়ন গত এক বছরে ৫০ লাখ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছেন। আর বিনিয়োগকারীকে তিনি বুঝিয়েছেন বাজারের স্বাভাবিক ওঠানামা এবং লোকসানের গল্প।
ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার পর রয়েল ক্যাপিটাল কর্তৃপক্ষ নয়নকে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ পদ থেকে ছাঁটাই করে। তবে এখানেই শেষ নয়—আমাদের অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে এসেছে, সরকার পতনের পর তিনি নিজ এলাকা বোয়ালখালীতে অবৈধ বালু ব্যবসায়ও বিনিয়োগ করেছেন।
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়,
২নং গেইট টেকনিক্যাল মোড়।
ইমেইল- news@chattalamorning.com
এটি চট্টলা মর্নিং এর ইপেপার সংস্করণ