মর্নিং প্রতিবেদক:
(বোয়ালখালীতে জন্ম নেওয়া অভিশাপ মনে করছেন বোয়ালখালীবাসী)
রেলমন্ত্রী বলে গেছেন,‘কালুরঘাট নতুন সেতু হতে চার-পাঁচ বছর সময় লাগবে।আমাদের সমীক্ষা শেষ।কোরিয়ান অর্থায়নে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা হবে।
দফায় দফায় প্রতিশ্রুতি,বিভিন্ন আশ্বাসের পরও সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া ঝুলে থাকা নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ আছে চট্টগ্রামবাসীর মধ্যে।নতুন মন্ত্রীর মুখে আবারও সেই পুরনো বার্তা পেয়ে যারপরনাই হতাশ সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বোয়ালখালীবাসী।দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি, কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণ করা নিয়ে নতুন মন্ত্রীর মুখে নতুন বার্তা পাবেন— এমন প্রত্যাশা ছিল দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর । কিন্তু মন্ত্রীর কাছ থেকে নতুন কিছু শোনা যায়নি। উল্টো, তিনি যে বয়ানে যা বলেন তাতে ভীষণ বেজার সবাই। তবে ‘বার্ধক্যের রোগ’ সারিয়ে মার্চের মাঝামাঝি পুরনো সেতুতে গাড়ি চালুর সুখবর দিয়েছেন মন্ত্রী।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেতুর দাবি আরও জোরালো হয়। ২০১৪ সালে আন্দোলন শুরু করে ‘বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ’।নতুন সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিন দফায় চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদল ২০১৯ সালে মারা যান। এরপর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মোছলেম উদ্দিন আহমেদ গত ফেব্রুয়ারিতে মারা গেছেন। সর্বশেষ ’ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা নোমান আল মাহমুদ।এখন এল আব্দুস সালাম।
এদিকে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও (চট্টগ্রাম-৮) আসনের নতুন সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম বলেন,সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হওয়াটাই আসল ব্যাপার। সময় কতদিন লাগবে সেটি বড় নয়। তবে নতুন সেতু নিয়ে নতুন রেলমন্ত্রীর আন্তরিকতার কথা জানিয়ে আশার বার্তা দিয়েছেন। বলেন, ‘মন্ত্রী কথা দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এটা একনেকে পাঠানো হবে।একনেক থেকে পাস হয়ে কাজ শুরু করার প্রক্রিয়া চলবে।
বোয়ালখালীর বহদ্দারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ৬২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে নিয়ে তার স্বজনরা যাচ্ছেন ডাক্তারের কাছে।অসুস্থ মানুষটিকে হাঁসফাস করতে দেখা গেছে।‘যে অবস্থা দেখছি, সিরিয়াস রোগী থাকলে গাড়ির মধ্যেই মারা যাবে। ফেরি ছোট, তার ওপর চালু করেছে একটা। আমাদের অপরাধ কী, বুঝতে পারলাম না।বোয়ালখালীতে জন্ম নেওয়া অভিশাপ।আমরা কী পাপ করেছিলাম, সেজন্য বোয়ালখালীতে জন্ম নিয়েছি।
বোয়ালখালী উপজেলা ও পটিয়ার একাংশের কয়েক লাখ মানুষের শহরে যাতায়াতের মূল মাধ্যম কালুরঘাট সেতু।ঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছতে না পারা মানুষের পাশাপাশি রোগীদের দুর্ভোগের চিত্রও দেখা গেছে সেতু এলাকায়।নতুন সেতু চেয়ে পেলাম ফেরি।কালুরঘাট ব্রিজ স্বপ্নই থেকে গেলো।প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিজের গুরুত্বটা বুঝাতে পারলে এভাবে গড়িমসি হতো না। জনসভার সবকিছু নজর কেড়েছে।কালুরঘাট নিয়ে হতাশায় ভুগছি দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী।
বোয়ালখালীবাসী দীর্ঘদিনের এ কালুরঘাট সেতু নিয়ে মনে করেছিলেন— নতুন সরকার গঠন হয়েছে; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু-এক বছরের মধ্যে নতুন সেতু করে দিবেন। কিন্তু (রেলমন্ত্রী) বক্তব্য আমাদের আরও পিছনের দিকে নিয়ে গেল।এখন সম্ভাবনার চেয়ে অসম্ভাবনার দিকটা বেশি দেখছি আমরা। নতুন রেলমন্ত্রীর পুরনো কথায় এলাকার মানুষ আবারও হতাশ হলো।একমাত্র কালুরঘাট সেতুর কারণে আমরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
এখন শুনছি, আরও ৪-৫ বছর লাগবে কালুরঘাট সেতু হতে।
Leave a Reply