আবুল হাসনাত মিনহাজ-চট্টগ্রাম
রায়ছটা ও প্রেমাশিয়া সড়ক কথা দিয়ে রাখেনি কেউ,জনজীবন পার করছে হাজার হাজার এলাকার মানুষ,ডিজিটাল ও স্মার্ট এর ছোঁয়া লাগেনি এখনো। প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেনি ভাঙা রাস্তায় চরম দুর্ভোগ।চট্টগ্রাম বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকা প্রেমাশিয়া ভোট আসলেই নেতাকর্মীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়।ভোট নেয়ার জন্য নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যায় নির্বাচিত নেতারা। পরবর্তী ভোট না আসা পর্যন্ত তাদের আর দেখা মেলে না। এভাবে চলে গেছে বিগত ৫৩ বছর,তবুও রাস্তা মেরামত বা পাকা হয়নি।নির্বাচনের সময় এমপি ও চেয়ারম্যানরা সড়ক মেরামত বা নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও কেউ কথা রাখেনি, বাঁশখালীর ৩নং খানখানাবাদ প্রেমাশিয়া ও রায়ছটা ইউনিয়নের সড়ক উন্নয়নের ব্যাপারে।
বাণীগ্রাম দিয়ে চৌধুরীহাট, ঈশ্বর বাবুর হাট থেকে ৩ কিলোমিটার সড়ক রায়ছটা-প্রেমাশিয়া (সন্দ্বীপপাড়া, রোসাংগি-পাড়া, সাইটপাড়া, মৌলভীপাড়া) ও প্রেমাশিয়া বাজার সহ কয়েকটি গ্রাম নিয়ে অবস্থিত।ওই গ্রামগুলোর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে উপকূলীয় সাঙ্গু নদী। এ এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, চাকুরীজীবি ও ব্যবসায়ীদের বর্ষা মৌসুমে নদীর পার দিয়ে বাঁশখালী উপজেলা বা চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার একমাত্র পথ বাণীগ্রাম, এই সড়কেরও বেহাল দশা। বর্ষা মৌসুম পরবর্তী খাল বিল ও সড়কের পানি কমে গেলে এলাকাবাসী নিজেদের স্বেচ্ছাশ্রমে পরিকল্পনা ছাড়া কোনরকম চলাচল উপযোগী করে দৈনন্দিন জীবন পার করছে এলাকার হাজারো মানুষ।
প্রেমাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মাবুদ ও ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন বলেন , সরকার যায় সরকার আসে কিন্তুু রায়ছটা প্রেমাশিয়া গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ শেষ হয়না।ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে না। নির্বাচনের সময় এমপি ও চেয়ারম্যান সাহেবরা নতুন সড়ক নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও কেউ কথা রাখেনি।
প্রেমাশিয়া গ্রামের সন্দ্বীপ পাড়ার বাসিন্দা সিদ্দিক মোল্লা ও রায়ছটা গ্রামের আক্তার হোসেন বলেন, যোগাযোগের পথ না থাকায় এলাকার উৎপাদিত কাঁচা মাল ও খাদ্য বঙ্গোপসাগরের মাছ সঠিক সময়ে ন্যায্য মুল্যে বিক্রয় করা সম্ভাব হয়না। ন্যায্য মুল্যের আশায় উৎপাদিত ফসল সমুদ্রের মাছ বিক্রি করতে চায়লে পার্শ্ববর্তী বানিগ্রাম বাজার নিয়ে যেতে হবে, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে তাও সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে বাঁশখালী উপজেলা বা চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যেতে হলে তাও সম্ভব না। বিভিন্ন হাট-বাজারে যেতে হয় ২০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে। ঐতিহ্যবাহী এলাকাগুলোর একমাত্র রোসাংগি পাড়া প্রেমাশিয়া বাজার সেটাও সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার পাশে হওয়াতে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গনের কারণে তলিয়ে গেছে নদীতে।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থী লতিফ বলেন, বর্ষা এলেই কাঁচা রাস্তায় কাদা জমে গর্ত সৃষ্টি হয়। আমরা চরম অবহেলিত এলাকায় বসবাস করি। নিজেদের উদ্যোগে রাস্তায় বালি ফেলে চলাচল উপযোগী করি। ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশের প্রচার থাকলে বাস্তবতা ভিন্ন এই এলাকার বিষয়ে।এত বছর যাবত পাকাকরণের পদক্ষেপ নেয়নি কেউ। সরকার আশে যায় এম পি, চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়।শুধুই প্রতিশ্রুতি দেয়, বাস্তবায়নের বিষয়ে কারোই কোনো ভূমিকা নেয়।রাস্তাটি পাকা হলে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় কেটে খাওয়া মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের চলাচলে সুবিধা এবং জীবনমানের উন্নতি ঘটতো।
মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এই সড়ক দিয়ে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা। তারা এই কাদামাটি ভাঙ্গা সড়ক দিয়ে চলাচল করে বিদ্যালয়ে ও মাদ্রাসায় আসতে ভয় পায়।
তারা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় আজ পর্যন্ত এ এলাকার কোন উন্নয়ন হয়নি।ফলে ওই প্রেমাশিয়া ও রায়ছটা বাঁশখালী উপজেলা ও চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ অজোঁপাড়া গাঁয়ের রূপ বহন করছে।এসব সড়কগুলো মেরামত পূর্ণ নির্মাণ হলে মানুষের যেমন উন্নয়ন ঘটবে তেমনি উপজেলা সহ চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কদমরসুল, ৩ নং খানখানাবাদ, প্রেমাশিয়া,রায়ছটা,চাটিগাই পাড়া,সন্দ্বীপ পাড়া, রোসাংগি পাড়া, মৌলভী পাড়া ও সাইট পাড়া সহ কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।
এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাঁশখালী ১৬- আসনের সংসদ সদস্য সিআইপি মুজিবের প্রতি এই এলাকার সড়কগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করার নতুনভাবে নির্মানের জন্য সর্বশেষ দাবী জানান এলাকাবাসী।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ৩’নং খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম হায়দার দৈনিক প্রতিদিনের কাগজকে জানান,সড়ক গুলো মেরামতের জন্য উপজেলা এলজিডি প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে টেন্ডার ও হয়েছে।পৌরসভা থেকে এলজিইডিতে দিয়েছি খুব শ্রীঘ্রই কাজ শুরু করবে।সড়ক গুলোর বেহাল অবস্থা বিবেচনা করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি।৩’নং খানখানাবাদ ইউনিয়ন এর অধিক অংশ জায়গায় রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমি জানিয়েছি।দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এবং এলজিইডিকে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply