চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের গ্রীষ্মকালীন স্কুলের সমাপনীতে মেয়রের আহ্বান: “উদ্ভাবনের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনুন”
চট্টগ্রামের এম এম আলী রোডস্থ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর ক্যাম্পাসে ২০২৫ সালের গণিত ও বিজ্ঞান গ্রীষ্মকালীন স্কুলের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউনিভার্সিটি এবং শেভরন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ১০২ জন মেধাবী শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সনদ অর্জন করেন।
বৃহস্পতিবার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, “আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি। আমি প্রত্যাশা করি, তোমরা অনেকেই এমন উদ্যোক্তা হবে যারা শুধু অফিস কক্ষ বা গবেষণাগারে নয়, বরং সমাজের ভেতরে গভীর পরিবর্তন আনবে।”
তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, “প্রথমত, তোমরা যেন চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো স্থানীয় সমস্যা উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে সমাধানের পথে এগিয়ে যাও। দ্বিতীয়ত, এমন নতুন উদ্যোগ ও ব্যবসা তৈরি করো যা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে, বিশেষ করে নারীদের এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য। তৃতীয়ত, টেকসই উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য এবং নাগরিক দায়িত্ববোধের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলো, যাতে তোমাদের উদ্যোগ শুধু ব্যবসায়িকভাবে লাভবান না হয়ে সমাজকেও উপকৃত করে।”
অনুষ্ঠানে শেভরন বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থেকে ইউনিভার্সিটির সঙ্গে তাদের চলমান অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা জানান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত শিক্ষার প্রসারে এ ধরনের উদ্যোগ নারীদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুলে দিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেন, এই স্কুল তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করেছে এবং ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞানভিত্তিক পেশা বেছে নেওয়ার প্রেরণা জুগিয়েছে।
২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের গ্রীষ্মকালীন স্কুল, শেভরনের সহযোগিতায়, দেশে নারী শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চায় যুক্ত করার অন্যতম সফল উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ কোর্স পরিচালিত হয় দেশি-বিদেশি অভিজ্ঞ শিক্ষকদের মাধ্যমে।নারী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে ইউনিভার্সিটি এবং শেভরনের যৌথ প্রচেষ্টা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সচেতন সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
অনুষ্ঠানে শেভরনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন—মুহাম্মদ ইমরুল কবির, চৌধুরী হাফেজ রুমেল, এ কেএম. আরিফ আক্তার, শাইখ জাহিদুর রহমান, মোহাম্মদ ফেরদৌস, তাহসীন খান, মো. জাহাঙ্গীর খান এবং আলী আশরাফ চৌধুরী। সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির উপ-রেজিস্ট্রার সানাউল করিম চৌধুরী, ছাত্রীবিষয়ক ডিন ডা. ফাতিমা মেরি সিডোতাম এবং গ্রীষ্মকালীন স্কুলের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিন আহসানুল কবির চৌধুরী। তাঁরা অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অধ্যবসায় এবং নিষ্ঠার প্রশংসা করেন এবং প্রোগ্রামের অসামান্য সফলতার জন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তারা উল্লেখ করেন যে, এই উদ্যোগ তরুণী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় ক্যারিয়ার গড়তে প্রেরণা জোগাতে অব্যাহত উৎসাহ প্রদান করছে।
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়,
২নং গেইট টেকনিক্যাল মোড়।
ইমেইল- news@chattalamorning.com
এটি চট্টলা মর্নিং এর ইপেপার সংস্করণ