শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
প্রতারক আব্দুল বাতেনের কবল থেকে নিঃস্ব ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনকে রক্ষায় প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন থানচিতে এলজিইডির সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে ক্ষোভ সাইকেল চালিয়ে ২৫০০ ফুট উঁচু ডিম পাহাড় জয় দুই তরুণের সরকার পতনের পর চট্টগ্রামে মাদকের রাজত্ব! চট্টগ্রামে ‘মব জাস্টিস’ বিতর্ক: সুপারশপে লুটপাট, কর্মচারীদের মারধর, প্রশ্নের মুখে আইনি শাসন চট্টগ্রাম মেডিকেল ঘিরে ফের সক্রিয় এম্বুলেন্স সিন্ডিকেট 🛑 চাক্তাইয়ের ছায়ামানব: ইসলামি ছদ্মবেশে গড়ে উঠেছে কালো টাকার সাম্রাজ্য চট্টগ্রামে ভুতুড়ে ফ্ল্যাটে অবৈধ অপারেশন থিয়েটার সুদ-জুয়ার টাকায় রাজনৈতিক পালাবদলের নাটক মঞ্চস্থ করছেন চট্টগ্রামের মিন্টু আহমেদ কালোজিরা: প্রাকৃতিক স্বাস্থ্যরক্ষায় এক নির্ভরযোগ্য বীজ
নোটিশ
চট্টলা মর্নিং নিউজে আপনাকে স্বাগতম, আমাদের পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

গণডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৩০ জন জলদস্যু’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭

সংবাদ দাতা
  • প্রকাশিত : সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ২৮৬ জন পড়েছেন

আবুল হাসনাত মিনহাজ

 

রুদ্ধশ্বাস অভিযানে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ফিশিং বোটে দুর্র্ধষ গণডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৩০ জন জলদস্যু’কে গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৭।চট্টগ্রাম; গণডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ০২টি ট্রলার জব্দ

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের নিকট অভিযোগ গৃহীত হয় যে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের, ভোলা ও বরিশাল উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যু বাহিনী কিছু দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর সম্প্রতি তারা আবারও পূর্বের ন্যায় সাগরে জেলেদের উপর অত্যাচার, জুলুম, চাঁদাবাজি এবং অপহরণসহ সকল প্রকার অন্যায় কাজ পরিচালনা করছে। ভুক্তভোগীদের এরুপ অভিযোগের বিষয়টি র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম মানবিকতার সহিত চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে উল্লেখিত এলাকায় ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।

এরই প্রেক্ষিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ থেকে অদ্য ১২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের স্থল ও সাগর পথে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের আভিযানিক দল দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে দুর্র্ধষ গণডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৩০ জন জলদস্যু’কে গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৭।

আসামিরা হলেন করিম,মোঃ রুবেল , মোঃ জফুর , শফি আলম,আঃ রহিম, মোঃ শামীম,মোঃ ইউসুফ , শাজাহান বেগম, মোঃ সাহাব উদ্দিন, মোঃ শওকত,মোঃ ইসমাইল, দেলোয়ার ইসলাম, নুর মোহাম্মদ,আব্দুর রহিম সিকদার, মোঃ মফিজুর রহমান,ফজল হক, মোঃ গিয়াস উদ্দিন, মোঃ কাছেদ,মোঃ আকিদ খান,মোঃ দিদারুল ইসলাম, মোঃ নাইম,মোঃ হারুন, মোঃ ইয়াছিন,মোঃ খলিলুর রহমান,মোঃ ইকবাল হোসেন,মোঃ শাহেদ, মোঃ হোসেন,মোঃ আলী হোসেন,আব্দুল মান্নান, মোঃ সোলায়মান তাদের আটক করে।

পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত সকল আসামীদের জ্ঞাতসারে তাদের নিজ হেফাজতে থাকা ০২ টি ট্রলার থেকে ০৮টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ০৫টি কার্তুজসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমান সরাঞ্জাম উদ্ধারসহ আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পুরো এক/দুই সপ্তাহ বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি করে দাপিয়ে বেড়ায়।গডফাদারদের কাজ হলো অস্ত্র, গুলি এবং ট্রলারের যোগান দেয়া।বিভিন্ন নৌ/লঞ্চ/স্টীমার ঘাটে সোর্সের মাধ্যমে আইন শৃংখলা বাহিনী সাগরে অভিযানে যাচ্ছে কিনা তা তদারকি করে জলদস্যুরা উপকূলে আসার সময় তা অবগত করাসহ বোট মালিক এবং মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে ডাকাতির মাছ ও মালামাল বিক্রি করে।এছাড়াও জলদস্যুরা সাগরে গিয়ে ডাকাতি করে মাছ এবং মালামাল বিক্রয়ের টাকা ৪০% কথিত গডফাদারের, ২০% তেল খরচ এবং বাকী ৪০% ডাকাতি সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত সদস্যদের মাঝে বন্টন করতো।

গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে আরোও জানা যায়,প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জনের ০৩টি সশস্ত্র ডাকাত চক্র (ভোলা, বরিশাল, কুতুবদিয়া এবং আনোয়ারা এলাকায়) একত্রিত হয়ে সাগরে বড় পরিসরে দস্যূতার পরিকল্পনা করছে।উল্লেখিত চক্রটির পরবর্তী ১০-১২ দিনের মধ্যে প্রায় ১৫-২০ টি ট্রলারে ডাকাতি করার পরিকল্পনা ছিল।ডাকাতি শেষে লুটপাটকৃত মাছ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ভোলা ও বরিশাল অঞ্চলের দিকে নিয়ে বিক্রয় করা হতো।পরবর্তীতে লভ্যাংশ আনোয়ারা-কুতুবদিয়া এলাকার জলদস্যুদের নিকট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হত।অভিযানের পরিকল্পনা অনুযায়ী র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি চৌকস আভিযানিক দল পতেঙ্গা হতে দক্ষিণ-পশ্চিমে গহীন সমুদ্রে তাদের গতিরোধের চেষ্টা করলে তারা র‌্যাবকে প্রতিহত করে এবং তাদের দিক পরিবর্তন করে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নৌ-বন্দর এলাকার ১৫নং ঘাটের দিকে আসতে থাকে।এসময় র‌্যাব সদস্যরা তাদের ২টি ট্রলারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ট্রলার থেকে অস্ত্র ও ডাকাতির মাছ এবং মালামালসহ ৩০ জনকে আটক করে।

এছাড়াও বিশেষ সুত্রে জানা যায়, এই ডাকাত দল মূলত তিনটি পর্বে বিভক্ত হয়ে তাদের দস্যূতার কার্যক্রম পরিচালনা করত।বিস্তারিতঃ ক। ধৃত আসামি শাহেদ মাঝী ছিল প্রথম গ্রুপের দলনেতা সে মূলত কুতুবদিয়া এলাকার অধিবাসি তার দলের কাজ ছিল ডাকাতি করার জন্য অস্ত্র, বোট, জাল এবং আনুসাঙ্গিক যে সকল সরঞ্জামাদি লাগতো সেগুলো সরবরাহ করা।ধৃত আসামির মধ্যে শাহেদ মাঝীর দলে ০৯ জন ডাকাত সদস্য ছিল।খ। ধৃত আসামি ইউসুফ মাঝী ছিল ২য় গ্রুপের ডাকাত নেতা এবং ডাকাতির মূল পরিকল্পণাকারী। সে প্রথমে ডাকাতির জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিবার্চন করতঃ বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে ডাকাতির জন্য প্রস্তুত করে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় একত্রিত করত। এরপর ডাকাতির স্থান নির্বাচন করে নিজে সশরীরে হাজির থেকে ডাকাতির কার্যক্রম সম্পন্ন করত ধৃত আসামি ইউসুফ। ধৃত আসামির মধ্যে ইউসুফ মাঝীর দলে ১১ জন ডাকাত সদস্য ছিল। গ। ধৃত আসামি করিম মাঝী ছিল ৩য় গ্রুপের ডাকাত নেতা। তার কাজ ছিল ডাকাতির পরে লুন্ঠিত যে সকল বোট, মাছ, জাল এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহপূর্বক সুবিধামত বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করে উক্ত টাকা গ্রæপের সকল সদস্যকে সমানভাবে বন্টন করা। উল্লেখ্য যে, ডাকাত সর্দার ইউসুফ মাঝী এবং করমি মাঝীর নিজস্ব বোট ও কোম্পানী রয়েছে যা দিয়ে তারা মাঝীর ছদ্মবেশে সমুদ্রে দস্যূতার কার্যক্রম পরিচলানা করত বলে তথ্য পাওয়া যায়। ধৃত আসামির মধ্যে করিম মাঝীর দলে ১০ জন ডাকাত সদস্য ছিল।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে অকপটে স্বীকার করে যে, তারা কয়েকটি সংঘবদ্ধ চিহিৃত শীর্ষ জলদস্যূ ও ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এলাকার সংঘবদ্ধ জলদস্যূ ঘটনায় সম্পৃক্ত সক্রিয় সদস্য। এছাড়াও এই দল গুলো দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ কক্সবাজার জেলার পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী থানা এলাকাসহ সাগর পথে বিভিন্ন চ্যানেলে ডাকাতি করে আসছে। উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে বিষয়োক্ত অপরাধের কারনে তাদের প্রত্যেকের নামে অসংখ্য মামলার তথ্য পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামি এবং উদ্ধারকৃত আগ্নেআস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সরঞ্জামাদি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রকিয়াধীন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
চট্টলা মর্নিং এর সকল স্বত্ব © ২০২৩-২০২৪ সংরক্ষিত
কারিগরি সহযোগিতায় ইনো. আইটি বাজার