রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
এনসিটি নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন: ইকবাল হোসেন সাংবাদিক মাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা জানাল বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ কল্পলোক আবাসিক এলাকায় শ্রমিকদের পাওনা মজুরি না দিয়ে মালিক উধাও ধরাছোঁয়ার বাইরে কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুন্না টিসিবি প্যাকেজিংয়ের আড়ালে লিটনের মিটবোন ফিড সিন্ডিকেট চট্টগ্রামে কুতুবুল আকতাব হযরত শাহ সুফি আমানত খান (রহ.) দরগাহ শরিফে ১২ দিনব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিল দুদকের মামলার আসামি হয়েও ফের চট্টগ্রামে পদায়ন ব্যবসার নামে ফয়সালের লাখ লাখ টাকা উত্তোলন, বিপাকে পাওনাদাররা লোকসানের নাটক দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ! রয়েল ক্যাপিটালের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বেলায়েত হোসেন নয়ন চাকরিচ্যুত হোটেল জামানের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবারের মানববন্ধন
নোটিশ
চট্টলা মর্নিং নিউজে আপনাকে স্বাগতম, আমাদের পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

কর্ণফুলী মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণেও দুর্নীতি: জসিম-অসীম গংয়ের হাতে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ

সংবাদ দাতা
  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ১৮২ জন পড়েছেন

কর্ণফুলী মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণেও দুর্নীতি: জসিম-অসীম গংয়ের হাতে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ

• প্রকল্প ব্যয় ২,৭৭৯ কোটি টাকা ছাড়ালেও ক্ষতিপূরণ বণ্টনে অবিচার
• ভূমি অধিগ্রহণ আইন লঙ্ঘন করে চলছে পকেটভর্তি ‘কমিশন বাণিজ্য’
• প্রভাবশালীরা পাচ্ছে ১৪ লাখ, গরিবদের ভাগ্যে মাত্র ২-৩ লাখ!
• জসিম-অসীমের ইন্ধনে ভয়ভীতি, মামলা দিয়ে দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আওতাধীন কর্ণফুলী মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পে একদিকে বাজেট ফুলে ফেঁপে ২,৭৭৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণ বণ্টনে চলছে ভয়াবহ দুর্নীতি। সরকারি অর্থে বাস্তবায়িত প্রকল্প হলেও এর সুবিধা পাচ্ছে না প্রকৃত ভুক্তভোগীরা। বরং ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ, যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হলেও মিলছে না ন্যায্য পাওনা।

বাংলাদেশের “অর্জন ও অধিগ্রহণ আইন, ২০১৭ (Act No. 21 of 2017)” অনুসারে, সরকারের অধিগ্রহণযোগ্য জমির বিপরীতে মালিককে প্রকৃত বাজারমূল্যসহ ৩০০% অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ এবং ঘরবাড়ি থাকলে পুনর্বাসনের সুবিধা দিতে হয়। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে এলাকার সরকারি রেট ও স্থাবর সম্পত্তির অবস্থা বিবেচনায় নিতে বলা আছে। কিন্তু বাস্তবচিত্র ভিন্ন। সিডিএ কর্তৃপক্ষের অসীম ও জসিমের নেতৃত্বে গঠিত দুর্নীতিবাজ চক্র এই আইনকে পদদলিত করে চলেছে।

ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ লাখ টাকার জায়গায় কে পাচ্ছে ১৩-১৪ লাখ টাকা—এই প্রশ্নে এলাকাজুড়ে চলছে চাপা গুঞ্জন। ‘খেতচর বাস্তহারা নতুন ব্রিজ’ এলাকার বাসিন্দাদের মতে, “ক্ষমতাধর বা চেনাজানা থাকলে টাকা পাওয়া যায় বেশি, গরিব হলে বলে ফাইল নাই, টাকা নাই।” অভিযোগ রয়েছে, ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে কোনো প্রমাণ বা রশিদ দেওয়া হচ্ছে না, ফলে ভবিষ্যতে কোনো আইনি দাবি তোলার সুযোগও থাকছে না।

জসিমের ভয়ভীতি ও পুলিশের ব্যবহার
ভূমি হারানো পরিবারগুলো প্রতিবাদ করলেই পুলিশের ভয় দেখানো হয়। ‘সরকারি কাজে বাধা’, ‘চাঁদাবাজি’ কিংবা ‘জমি দখলের চেষ্টা’র মতো মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মুন্না বলেন, “আমরা কালভার্ট চেয়েছিলাম, পাইপ বসায়া রাস্তা ডুবাইছে। জসিমরে বললে বলে, বেশি কথা কইলে মামলা দিব।”

বস্তিবাসী হানিফা বেগম বলেন: “ঘর ভাঙছে, বলছে ৩ লাখ দিব। পাশেরজন পাইছে ১২ লাখ। জসিমরে ধরলে কয়, ‘চুপচাপ নে, নইলে তোরে দেখামু।’”ভূক্তভোগী কামাল হোসেন বলেন: “জমি তো সরকার নিলো, কিন্তু টাকা কয়বার দালাল বদলাইছে। শেষমেশ পাইছি অর্ধেক।”মজদুর আমিনুল বলেন: “আমাদের ঘর নিচ্ছে, কাগজ নাই বলছে। অথচ পাশে ঝুপড়ি ঘরের লোকেও টাকা পাইছে।” ভুক্তভোগী সালেহা আক্তার জানান: “সিডিএ অফিসে গেলেই ঘুরায়, কয় জসিমের অনুমতি লাগবে। টাকা না দিলে ফাইল নড়ে না।”

কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদার, চোখ বন্ধ সিডিএ!
সরকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড বর্তমানে প্রকল্পে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে, যা এক বড় প্রশ্ন তুলে দেয় প্রশাসনের নির্লজ্জ সমর্থন নিয়ে। গুণগত মানহীন নির্মাণসামগ্রী ও কাজের নামে সরকারি অর্থের অপচয় অব্যাহত থাকলেও সিডিএর পক্ষ থেকে নেই কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানায়, প্রকল্প পরিচালক রাজীব দাশ, জসিম ও কনসালটেন্ট অসীম কুমার বাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছে সংস্থাটি। যদিও তদন্ত চলমান, কিন্তু বাস্তবে কাজের গতি ও স্বচ্ছতায় নেই কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন।

অবশেষে—দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া মুক্তি নেই
যেখানে প্রান্তিক মানুষ তাদের বসতভিটা হারিয়ে জীবিকা হারাচ্ছেন, সেখানে কিছু কর্মকর্তার লোভ ও দুর্নীতির কাছে আইনের লঙ্ঘন যেন নিছক নিয়মে পরিণত হয়েছে। কর্ণফুলী মেরিন ড্রাইভ যেন এখন উন্নয়নের পথ নয়, বরং দুর্নীতির ‘মডেল প্রকল্প’—যার বিচার চায় এলাকাবাসী।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
চট্টলা মর্নিং এর সকল স্বত্ব © ২০২৩-২০২৫ সংরক্ষিত
কারিগরি সহযোগিতায় ইনো. আইটি বাজার