হাটহাজারী প্রতিনিধি:
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন চট্টগ্রামের সন্তান বাবর আলী।এভারেস্ট চূড়ায় বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়েছেন। সেই খুশিতে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নজুমিয়া হাট বুড়িশ্চরে বাবরের নিজবাড়িতে।
ছেলের ছবি নিয়ে বসে আছেন গর্বিত মা লুৎফুন নাহার ও বাবা লিয়াকত আলী।এভারেস্টের চূড়া স্পর্শ করার খবর সকালেই পেয়েছেন বাবরের মা লুৎফুল নাহার বেগম ও বাবা মো. লিয়াকত আলী। এর পর থেকেই তাঁদের কাছে অনবরত ফোন আসছে।আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী অনেকেই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।আসছেন গণমাধ্যমকর্মীরাও।
বাবর আলীর বাবা লিয়াকত আলী বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমার অনুভূতি খুব ভালো। গর্ববোধ করি। খুব আনন্দ লাগছে। এখনো শঙ্কা কাটেনি। যতক্ষণ ছেলে বুকে ফিরে না আসবে শঙ্কামুক্ত হবো না।চিকিৎসার সঙ্গে পর্বাতোরোহন খাপ খায় না উল্লেখ করে বাবা বলেন, কিন্তু ওর শখ ছিল পর্বাতোরোহন, এভারেস্ট জয় করা। এর আগে নেপালে আরেকটি পর্বত জয় করেছিল।’
এভারেস্টে চূড়ায় উঠার আগের অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, অবশ্যই টেনশনে ছিলাম। অনেক ঘটনা, দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্টাডি করেছি। তাই চিন্তিত ছিলাম। প্রথমবার সে এভারেস্টে উঠছে তাই টেনশনে ছিলাম। ট্রেনিং নিলেও, প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা নেই। তাই টেনশনে রাতে ঘুম হতো না অনেক সময়। অ্যালার্ট থাকতাম। দোয়া করি, যেন প্রতিটি ক্ষেত্রে আমার ছেলে সফল হয়।’
পেশায় চিকিৎসক নেশায় পর্বাতোরোহী বাবর আলী মা অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘দুই মাস ধরে ঘুমাতে পারছি না। ছেলে এমন একটা চ্যালেঞ্জ নিল, যেখানে মৃত্যুঝুঁকি আছে। দিনে মাত্র দুই–তিন ঘণ্টা করে ঘুমিয়েছি। ছেলের জন্য দুশ্চিন্তা হচ্ছে। নিরাপদে নেমে এলে এ দুশ্চিন্তা কমবে।
যখন ফারহান ফোন করে বলেছে, আল্লাহর রহমতে আপনার ছেলে এভারেস্টের চূড়ায় উঠে গেছে।টেনশন করবেন না। ইনশাআল্লাহ নেমেও আসবে।মা হিসেবে তো এ আনন্দ বলার মতো না, খুবই আনন্দিত। কিন্তু টেনশন, শঙ্কামুক্ত না। আমাদের আশা ছিল ছেলে ডাক্তারিতে বসবে। ওর অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল এভারেস্টে উঠবে। ছোটবেলা থেকে দুরন্ত প্রকৃতির ছিল। চার ভাই-বোনের মধ্যে ওর দুরন্তপনা বেশি ছিল। খুবই দুরন্ত ছিল।
এভারেস্ট জয়ের যাত্রার সময় ভিডিও কলে কথা বলেছে, দোয়া করার জন্য বলেছে। আমি কান্না করছিলাম। বলেছে, টেনশন না করতে। তিন-চার তারিখ ফিরবে। টিকিট করা আছে। টেনশন না করতে বলেছেন।ওর আশা পূরণ হয়েছে। ওর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ও কথা দিয়ে গেছে, এবার ফিরে আসলে ডাক্তারি ঠিকমতো করবে।আরেকটা ডিগ্রি নেবে।’
Leave a Reply