স্থানীয় সূত্র ও অনুসন্ধান বলছে, ‘আব্দুল্লা আল ইসলাম সোহাগ’ নামের এই ব্যক্তি রাজনৈতিকভাবে পরিচিত হলেও তার মূল শক্তি গড়ে উঠেছে অর্থ, প্রভাব ও ছদ্মপরিচয়ের ওপর। একদিকে তিনি ইসলামি দলের ছায়াতলে থাকলেও অন্যদিকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে নিজেকে ‘অদৃশ্য সুরক্ষা বলয়ে’ আবদ্ধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিশ্লেষণ বলছে, সোহাগ চাক্তাই ও আশপাশের এলাকায় একাধিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন, যার অধিকাংশই নগদ লেনদেননির্ভর এবং আয়কর বা ভ্যাট নথিভুক্ত নয়। শুল্ক ফাঁকি, গুদাম ভাড়া, জমি লেনদেন এবং আমদানি পণ্যের ‘পিছনের হিসাব’ নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ভেতরে। কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক টার্নিং পয়েন্টের পর তার ব্যাংক লেনদেনেও অস্বাভাবিক গতি লক্ষ্য করা গেছে।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার, ফেক আইডি, ভিডিও বিকৃতি ও সাইবার হয়রানির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে মামলার ভয়ভীতি ও সংবাদ সম্মেলনে হস্তক্ষেপের কৌশল ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের একটি আলোচিত ঘটনার অনুসন্ধানেও তার সংশ্লিষ্টতা উঠে এসেছে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই হুমকি, মামলা কিংবা চরিত্রহননের চেষ্টা শুরু হয়। এসব ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও একটি প্রভাবশালী মিডিয়া চক্রের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

একটি সূত্র বলেছে, সোহাগের কোনো বড় করনির্ভর ব্যবসা বা কোম্পানি নেই, অথচ তার সম্পদ ও লাইফস্টাইল চোখে পড়ার মতো। দামি ফ্ল্যাট, অর্থবিনিয়োগ ও মিডিয়ায় প্রভাব—সবই অপ্রদর্শিত টাকার ইঙ্গিত দেয়। আয়কর রিটার্ন, পারিবারিক সম্পদের বিবরণী ও ব্যাংক লেনদেনে বিস্তর গরমিল রয়েছে বলে গোপন তদন্ত সূত্রে জানা গেছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে—এতকিছুর পরও সোহাগের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না হওয়ার পেছনে রয়েছে কী? প্রশাসনের নীরবতা? নাকি একটি সুসংগঠিত সুবিধাভোগী চক্র?

অভিযোগ জানতে যোগাযোগ করা হলে সোহাগ সরাসরি মন্তব্য না দিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে একাধিক নম্বর থেকে ‘গণমাধ্যমকর্মী’ পরিচয়ে সাংবাদিকদের রিপোর্ট প্রকাশ না করতে চাপ দেওয়া হয়, যার সত্যতা যাচাই করে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমে কর্মরত এমন কাউকে পাওয়া যায়নি।