বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
দুদকের মামলার আসামি হয়েও ফের চট্টগ্রামে পদায়ন ব্যবসার নামে ফয়সালের লাখ লাখ টাকা উত্তোলন, বিপাকে পাওনাদাররা লোকসানের নাটক দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ! রয়েল ক্যাপিটালের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বেলায়েত হোসেন নয়ন চাকরিচ্যুত হোটেল জামানের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে জবরদখলের অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবারের মানববন্ধন তানযীমুল উম্মাহ গার্লস মাদরাসা, হালিশহর শাখার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান–২০২৫ সম্পন্ন বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তরুণ লেখক সম্মেলন ও ম্যাগাজিন মোড়ক উন্মোচন সম্পন্ন রাজাখালীতে অস্ত্রের মহড়া, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ফোরকান-ইকবাল বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের উপদেষ্টা হলেন মনিরুল ইসলাম ইউসুফ নাম পাল্টে কোটি টাকার প্রতারণা: রায়ন্স থেকে গ্লোবাল প্যাসিফিক, অয়ন ও তার বাবার চক্র মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এক্সটিংগুইশার আম্বিয়া সেরীন আবাসিক এপার্টমেন্ট ভবনে
নোটিশ
চট্টলা মর্নিং নিউজে আপনাকে স্বাগতম, আমাদের পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

চট্টগ্রামে ভুতুড়ে ফ্ল্যাটে অবৈধ অপারেশন থিয়েটার

হেলাল উদ্দিন:
  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
  • ২১১ জন পড়েছেন

সুগন্ধা আবাসিকে ডাঃ বিজন ও ডাঃ চিন্ময় মল্লিকের ‘দৃষ্টিসেবা’ ফ্ল্যাটে নিয়মিত চোখের অপারেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে চক্ষু চিকিৎসার খ্যাতির আড়ালে গড়ে উঠেছে একের পর এক বেনামী, নিবন্ধনহীন ও অবৈধ প্রতিষ্ঠান। সেসবেরই একটি চাঞ্চল্যকর উদাহরণ মিলেছে সুগন্ধা আবাসিক এলাকার এক ভুতুড়ে ফ্ল্যাটে—যেখানে ‘দৃষ্টিসেবা’ নামের একটি কথিত প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত চোখের ছানি অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছেন ডাঃ বিজন কুমার ও ডাঃ চিন্ময় মল্লিক।

অনুসন্ধানে যা পাওয়া গেছে

গত ২৭ মার্চ একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানী দল সরেজমিনে ওই ফ্ল্যাটে গেলে দেখা যায়, ভেতরে ছানি অপারেশন চলছে। সেখানে থাকা রোগীরা জানেন না, এটি কোনো অনুমোদিত হাসপাতাল নয়, বরং একটি আবাসিক ফ্ল্যাট। অভিযুক্ত চিকিৎসকরা অনুসন্ধানী দলের ক্যামেরা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং সরাসরি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এমনকি সাংবাদিকদের হেনস্তা ও ভয়ভীতি দেখানোরও চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা জানতেন না যে ‘দৃষ্টিসেবা’ আসলে কোনো লাইসেন্সধারী হাসপাতাল নয়। তারা ভেবেছেন এটি একটি বৈধ চিকিৎসাকেন্দ্র।

নিবন্ধনহীন অপারেশন থিয়েটার

অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে, সুগন্ধার এই ফ্ল্যাটটি এক সময় শুধুই বাসা ছিল। পরে সেখানে চিকিৎসকের চেম্বার খোলা হয় এবং ধীরে ধীরে গড়ে তোলা হয় অপারেশন থিয়েটার। এই কথিত প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয় একেকটি অপারেশনের জন্য।

তবে দৃষ্টিসেবা নামক এই প্রতিষ্ঠানটির নেই—

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমোদন,

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র,

ফায়ার সার্ভিসের অনুমতি,

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অনুমোদিত মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা,

ট্রেড লাইসেন্স বা রাজস্ব পরিশোধের তথ্য।

ফলে একদিকে যেমন সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব, অন্যদিকে ঝুঁকির মুখে পড়ছে অসচেতন রোগীদের জীবন।

অভিযুক্তদের বক্তব্য

ডাঃ বিজন কুমার দাবি করেন,

> “এই প্রতিষ্ঠান ৪০ বছর ধরে চলছে। এটা আসলে চেম্বার। ডাক্তার চেম্বারে অপারেশন করতেই পারেন।”

তিনি আরও বলেন,

> “যদি সিভিল সার্জন এসে বন্ধ করে দেয়, তাহলে বন্ধ করে দেবো।”

তবে এ বিষয়ে কোনো সরকারি ছাড়পত্র বা প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি।

ডাঃ চিন্ময় মল্লিক সাংবাদিকদের দেখে উত্তেজিত হয়ে বলেন,

> “আপনারা কারা? এখানে কেন এসেছেন? আইডি কার্ড দেখান।”

তিনি সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে তদবির শুরু করেন। পরে কোনো পথ না পেয়ে অনুসন্ধানকারী সাংবাদিকদের অনৈতিক প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রশাসনের অবস্থান

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,

> “ফ্ল্যাটে বা নিবন্ধনহীন প্রতিষ্ঠানে অপারেশন থিয়েটার চালানোর কোনো অনুমতি নেই। এমন তথ্য আমরা এখনো পাইনি। তবে আপনারা সহযোগিতা করলে আমরা অভিযান চালিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”

চোখের মতো স্পর্শকাতর চিকিৎসা নিয়ে যদি ফ্ল্যাটে বসে ব্যবসা চলে, তা জনস্বাস্থ্যের জন্য এক বড় ধরনের হুমকি। প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে চলা এসব অবৈধ অপারেশন থিয়েটার এখনই বন্ধ করা না গেলে, চট্টগ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থার সুনাম ধ্বংসের পথে যেতে বাধ্য।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
চট্টলা মর্নিং এর সকল স্বত্ব © ২০২৩-২০২৫ সংরক্ষিত
কারিগরি সহযোগিতায় ইনো. আইটি বাজার