নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম নগরের নতুন ব্রিজ চত্বর এখন যেন নিয়ন্ত্রণহীন পরিবহন নৈরাজ্যের চিত্রপট। বাসের হেলপাররা সড়কের উপর দাঁড়িয়ে যাত্রীদের প্রলুব্ধ করে জোরপূর্বক বাসে উঠিয়ে নিচ্ছে। অপহরণের মতো আচরণে আতঙ্কিত যাত্রীদের অনেকে বাসে উঠতেও ভয় পাচ্ছেন।
সড়কের ওপর যাত্রী তোলার পাল্লায় বাসচালকরা মাঝে মধ্যেই বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন। এতে করে নতুন ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় নিয়মিত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষজন পড়ছেন ভয়াবহ ভোগান্তিতে। দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তায় আটকে থেকে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও।
গ্যারেজ নেই, রাস্তাই পার্কিং স্পট!
নতুন ব্রিজ এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা পরিবহনগুলোর বেশিরভাগেরই নিজস্ব কোনো গ্যারেজ নেই। তারা দিনের পর দিন রাস্তার ওপরই গাড়ি পার্কিং করে রাখে। এতে সংকুচিত হয়ে আসে চলাচলের রাস্তা, সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। বেপরোয়া পার্কিং ও এলোমেলো বাস দাঁড়ানোর ফলে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার যাত্রীকে।
রুট পারমিটহীন পরিবহন রাজত্ব
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্র বলছে, নতুন ব্রিজ এলাকায় চলাচলরত বাসগুলোর মধ্যে ঈগল পরিবহন, ঈগল ওয়ান, ঈগল স্পেশাল, ঈগল সুপার, মিনি বাস শ্যামলি, লোহাগড়া এক্সপ্রেস এবং হানিফ পরিবহনের বেশিরভাগ গাড়ির বৈধ রুট পারমিট নেই।
নিয়ম অনুযায়ী, যেসব বাসের রুট পারমিট নেই, সেগুলো নগরীর নির্দিষ্ট এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। অথচ এসব গাড়ি堂্堂্অধিকার চালিয়ে যাচ্ছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে।
বিশেষ করে চট্টগ্রামের “জ” সিরিয়ালের (গ্রামীণ এলাকার রেজিস্ট্রেশন নম্বর) গাড়িগুলো কীভাবে শহরের ভেতর চলাচল করে—তা নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা চলছে সর্বত্র।
নির্দিষ্ট টার্মিনাল নেই, সড়কেই টার্মিনাল!
এসকল মিনি বাস ও লাইন পরিবহনগুলোর নেই কোনো নির্দিষ্ট টার্মিনাল বা নির্ধারিত স্ট্যান্ড। ফলে বাসগুলো সড়কেই দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার নামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। রাস্তার একাংশ দখল করে রাখা এই বাসগুলোর জন্য পুরো এলাকাতেই তৈরি হচ্ছে অনির্ধারিত স্ট্যান্ডের মতো চিত্র।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট টার্মিনাল ছাড়া নগরের ভেতর এমন পরিবহন চলাচল আইনবিরোধী। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে নগরবাসীর ভোগান্তি আরও বাড়বে।
নগরবাসীর দাবি
নগরবাসীরা বলছেন, নতুন ব্রিজ চত্বরের এই নৈরাজ্য রোধে জরুরি ভিত্তিতে অভিযান চালাতে হবে। রুট পারমিটহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে এবং পরিবহন মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি সড়কে গাড়ি পার্কিং বন্ধ করে নির্দিষ্ট টার্মিনাল ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন তারা।
Leave a Reply